বয়স্কদের কল্যাণ নিশ্চিতে বহুপাক্ষিক অংশীদারিত্ব ভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করতে হবে- জাতিসংঘে রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন

নিউইয়র্ক, ২৩ জুলাই ২০১৮:

“বয়স্কদের কল্যাণ নিশ্চিতে একটি বহুপাক্ষিক অংশীদারিত্ব ভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করতে হবে যেখানে তাঁদের উপসম ও পরিচর্যা সেবার (palliative care) ক্ষেত্রে আর্থিক, কারিগরি ও সক্ষমতা বিনির্মাণ (capacity building) বিষয়ে সহায়তা ও সমর্থন অব্যাহত রাখতে হবে এবং বৈশ্বিক সর্বোত্তম চর্চাসমূহ বিনিময়েরও সুযোগ থাকবে। আমি প্রত্যাশা করি আমাদের উন্নয়ন অংশীদারগণ এবং জাতিসংঘ এই কাজে এগিয়ে আসবেন” -আজ জাতিসংঘ সদরদপ্তরে ‘ওপেন-এন্ডেড ওয়ার্কিং গ্রুপ অব এইজিং’ এর নবম সেশনের সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে একথা বলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন। বয়স্কদের কল্যাণে উন্নয়নশীল দেশগুলো সর্বোচ্চ আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করলেও অনেক সময় প্রয়োজনীয় সম্পদের প্রাপ্যতায় ঘাটতি দেখা যায় আর একারণেই ‘বহুপাক্ষিক অংশীদারিত্ব ভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি’গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বর্তমান সরকার দেশের বয়স্ক জনগোষ্ঠীর কল্যাণে যেসকল পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে তা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ইতোমধ্যে সরকার কাজের বিনিময়ে খাদ্য, কাজের বিনিময়ে অর্থ, দুস্থ গোষ্ঠীর খাদ্যসহায়তা (ভিজিএফ) এর মতো নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচিসহ বয়স্কদের জন্য বেশকিছু কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। চালু করা হয়েছে বয়স্ক ভাতা। সরকারি চাকুরিতে অবসর গ্রহণের বয়স ৫৭ থেকে বাড়িয়ে ৫৯ বছর করা হয়েছে”। এছাড়া দেশের কমিউনিটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রসমূহ বয়স্কসহ সকল নাগরিকদের প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে যাচ্ছে এবং এর পরিধি দিন দিন বিস্তৃত হচ্ছে মর্মে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত মাসুদ।

বাংলাদেশ সরকার বয়স্কদের কল্যাণ ও সুযোগ-সুবিধার আওতা উত্তরোত্তর বাড়াতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মর্মে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সহায়হীন বয়স্কদের আশ্রয় দিতে সরকার ‘শান্তি নিবাস’ নামে দেশের প্রতিটি বিভাগে একটি করে বয়স্ক আশ্রয় কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং এক্ষেত্রে ব্যক্তিগত ও এনজিও প্রচেষ্টাসমূহকে আর্থিক ও নীতিগতভাবে সহযোগিতা করছে। বাংলাদেশ সরকার পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ নীতিমালা প্রণয়ন করেছে মর্মেও জানান রাষ্ট্রদূত মাসুদ।

বাংলাদেশের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ‘কমিশন ফর স্যোসাল ডেভোলপমেন্ট’ এর ৫৬তম অধিবেশন উপলক্ষে ‘বয়স্ক জনগোষ্ঠীর জন্য ২০০২ সালে গৃহীত মাদ্রিদ ইন্টারন্যাশনাল প্ল্যান অব অ্যাকশান এর তৃতীয় রিভিউ ও এ্যাপরাইজালের আঞ্চলিক ফলাফলের উপর গ্লোবাল রিভিউ (The global review of the outcomes of the third review and appraisal of the Madrid International Plan of Action on Ageing, 2002)’ সংক্রান্ত উচ্চ পর্যায়ের প্যানেল আলোচনায় এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের পক্ষে অংশগ্রহণ করেছেন মর্মে উল্লেখ করেন স্থায়ী প্রতিনিধি। তিনি বলেন, “মাদ্রিদ প্লান অব অ্যাকশন এর অন্তর্নিহিত তাৎপর্য অনুযায়ী বাংলাদেশ ২০১৩ সালে বয়স্কদের জন্য জাতীয় নীতিমালা প্রণয়ন করেছে এবং এর বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে”।

যুবদের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রদূত বলেন, “সমাজের পরিবর্তনশীলতার প্রেক্ষাপটে যখন যুবরা পরিবর্তনের নিয়ামক হিসেবে কাজ করবে তখন অবশ্যই তারা বয়স্কদের  জ্ঞান ও প্রজ্ঞাকে সর্বোত্তমভাবে কাজে লাগাবে”।

ওপেন-এন্ডেড ওয়ার্কিং গ্রুপ অব এইজিং’ এর এই সভা আগামী ২৭ তারিখ পর্যন্ত চলবে।

***