নিউইয়র্ক, ০৮ অক্টোবর ২০১৮ :
“প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে সুদৃঢ় সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভিত্তির উপর দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। তাই জনগণের সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ নিশ্চিতে দৃঢ়সংকল্প ও প্রতিশ্রুতির কথাই প্রতিভাত হয়েছে বাংলাদেশের উন্নয়ন পরিক্রমায়। শক্তিশালী ও টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ, সমগ্র-সমাজ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে জনগণ-কেন্দ্রিক নীতিমালা প্রণয়ন এবং রাজস্ব ও অন্যান্য খাত সংস্কারের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকার বাংলাদেশের এই উন্নয়ন পরিক্রমা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সুনিপুন দক্ষতায়” -আজ জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ৭৩তম সাধারণ পরিষদের আওতাধীন দ্বিতীয় কমিটির সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে একথা বলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন।
বাংলাদেশের অর্থনীতি বিশ্বের ৪৩তম একথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত মাসুদ বলেন, “আমাদের জিডিপি’র প্রবৃদ্ধির হার ৭.৮৬%, দারিদ্র্য সীমা ২১.৪% এবং অতি-দারিদ্র্য সীমা ১১.৩%”। তাঁর বক্তৃতায় উঠে আসে ১০ মিলিয়ন কর্মসংস্থানের লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশের ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২০ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত, ৯০% জনগণকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনা, ৯৯% জনগণ পয়নিষ্কাশন ও ৮৮% জনগণের নিরাপদ পানি প্রাপ্তি, জনগণের দোর গোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌছানো, উন্নয়নের বাহন হিসেবে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’বাস্তবায়নসহ শেখ হাসিনা সরকার গৃহীত বিভিন্ন যুগান্তকারী পদক্ষেপের কথা।
রাষ্ট্রদূত মাসুদ তাঁর বক্তৃতায় বাংলাদেশে বাস্তবায়িত বিভিন্ন মেগা প্রকল্পসমূহ যেমন বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ মহাকাশে উৎক্ষেপন, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন এবং বাস্তবায়নাধীন পদ্মা বহুমূখী সেতু প্রকল্পের কথা উল্লেখ করেন।
স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, “প্রথমবারের মতো এবছর এলডিসি ক্যাটাগরি থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন দেশের উন্নয়ন ইতিহাসে একটি বিশেষ মাইলফলক”। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশ গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন, সপ্তম-পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সাথে এসডিজিকে একীভূত করে এর বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন, স্বাস্থ্যখাতে উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়নসহ বহুমূখী অবদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন বৈশ্বিক অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছেন মর্মে তুলে ধরেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত বলেন, রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে এবং রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।
এই উন্নয়ন অগ্রযাত্রার চ্যালেঞ্জ বিশেষ করে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জাতিসংঘসহ উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও অংশীদারদের সহযোগিতা বৃদ্ধি ও তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত মাসুদ।
উল্লেখ্য, সেপ্টেম্বর মাসের শেষে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনের হাই-লেভেল সপ্তাহ সমাপ্তির পর সাধারণ পরিষদের ছয়টি প্রধান কমিটির পৃথক পৃথক কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। পাশাপাশি নিরাপত্তা পরিষদসহ জাতিসংঘের অন্যান্য মূল অঙ্গসমূহের কাজও একইসাথে শুরু হয়েছে। ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে ক্রিসমাসের ছুটির আগ পর্যন্ত জাতিসংঘের অন্যতম ব্যস্ত এই সময়কালে কমিটিগুলোর কার্যকম চলবে এবং এর প্রেক্ষিতে ডিসেম্বর/জানুয়ারি সময়কালে সাধারণ পরিষদের অধিকাংশ রেজ্যুলেশনসমূহ গৃহীত হবে।
***