স্বাস্থ্যখাতের সাফল্যে বাংলাদেশকে রোল মডেলে পরিণত করেছে শেখ হাসিনা সরকার – জাতিসংঘে রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন

নিউইয়র্ক, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮ :

“স্বাস্থ্যখাতের সাফল্যে বাংলাদেশকে রোল মডেলে পরিণত করেছে শেখ হাসিনা সরকার। বাংলাদেশ সাশ্রয়ী উপায়ে উন্নত স্বাস্থ্য সেবা প্রদানে অনন্য উদাহরণ” -আজ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য ও বৈদেশিক নীতি : উন্নত পুষ্টির মাধ্যমে স্বাস্থ্যকর বিশ্ব’(Global health and foreign policy: healthier world through better nutrition) বিষয়ক ৭৩তম সাধারণ পরিষদের এজেন্ডাভুক্ত এক আলোচনায় বক্তব্য প্রদানকালে একথা বলেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন।

বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের ব্যাপক সাফল্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও প্রতিষ্ঠানের প্রশংসার কথা উল্লেখ করে স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, “বিখ্যাত ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল ল্যানসেট বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের সাফল্যকে জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে এক বিরাট বিস্ময় হিসেবে উল্লেখ করেছে। জনস্বাস্থ্যবিদেরা এ খাতকে প্রত্যাশার চেয়েও বেশি ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন এবং বলছেন, ব্যাপক চালেঞ্জ মোকাবিলা করেও স্বাস্থ্যখাতে বাংলাদেশ দারুন ভালো করছে”।

স্বাস্থ্য খাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন বিষয়ে তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টেকসই রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির ফলেই মা ও শিশু-স্বাস্থ্য ভিত্তিক স্বাস্থ্য কৌশল, সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি এবং কম খরচের উদ্ভাবনী প্রযুক্তির বাস্তবায়ন, মাঠকর্মীদের নিরবচ্ছিন্ন সংযোগ স্থাপন, কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার কার্যকর সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ, সরকারের আন্ত:মন্ত্রণালয় ও সংস্থার মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সমন্বয় বৃদ্ধি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার দেশের স্বাস্থ্যখাতে আমূল পরিবর্তন এনে দিয়েছে।

রাষ্ট্রদূত মাসুদ গ্রামীণ ও প্রান্তিক স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে ৩৬ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদানের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। স্বাস্থ্যখাতের অগ্রগতিতে গণমাধ্যমের ইতিবাচক ভূমিকার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।

স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, “স্বাস্থ্যখাতে জিডিপি’র ৩ শতাংশেরও কম ব্যয় করেও নবজাতক, পাঁচ বছরের কম বয়সের শিশু ও মাতৃমৃত্যু হার হ্রাস; টিকাদান কর্মসূচির আওতা বৃদ্ধি এবং উচ্চ আয়ুষ্কাল প্রত্যাশার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কাঙ্খিত সাফল্য অর্জন করেছে। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রতি এক হাজার জন্মে নবজাতক মৃত্যুহার ২৯ এবং পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যু হার ৩৬ যা দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশ থেকেই কম। পরিবার পরিকল্পনা, টিকাদানের মাধ্যমে সংক্রামক রোগের বিস্তার রোধ এবং টিবি ও ম্যালেরিয়া রোগ প্রতিরোধেও আমরা সফল হয়েছি”।

স্বাস্থ্য রক্ষায় যথাযথ পুষ্টির গুরুত্ব উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত মাসুদ বলেন, উন্নয়ন অংশীদার ও জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার সাথে যৌথভাবে বাংলাদেশ সরকার স্বাস্থ্য ও পুষ্টির মান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।

স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, “বিশ্বের সকল মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় সর্বোচ্চ বৈশ্বিক মান অর্জন করার বিষয়টি দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে বাংলাদেশ। সার্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচি (ইউএইচসি) ছাড়া এই মৌলিক মানবাধিকার রক্ষা করা সম্ভব নয়। আর এজন্য টেকসই উন্নয়ন লক্ষসমূহের আওতাভুক্ত ইউএইচসি ২০৩০ সালের মধ্যে অর্জনের জন্য বাংলাদেশ বিশ্ব সম্প্রদায়ের সাথে কাজ করে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ”।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য ও বৈদেশিক নীতি : উন্নত পুষ্টির মাধ্যমে স্বাস্থ্যকর বিশ্ব’ বিষয়ে একটি রেজুলেশন গ্রহণ করে যাতে পূর্ণ সমর্থন দেয় বাংলাদেশ।

***