২০১৯ সালকে স্বাগত জানিয়ে সাংবাদিকবৃন্দের সাথে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় অনুষ্ঠান

নিউইয়র্ক, ২২ জানুয়ারি ২০১৯ :

প্রতি বছরের ন্যায় এবারও জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে নতুন বছর ২০১৯ কে স্বাগত জানিয়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন। সাংবাদিকবৃন্দের সাথে এই শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় অনুষ্ঠানে মিশনের কর্মকর্তাগণ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের কনসাল জেনারেল মিজ্ সাদিয়া ফয়জুন্নেছা।

রাষ্ট্রদূত মাসুদ উপস্থিত সাংবাদিকদের শুভেচ্ছা জানিয়ে স্বাগত বক্তব্য দেন। তিনি তার বক্তব্যে জাতিসংঘে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ এবং সাফল্যের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। বহুপাক্ষিক ফোরাম এবং দ্বিপাক্ষিক ফোরামে কাজের ধরণ, ভিন্নতা এবং সাফল্য অর্জনের মাপকাঠির বিষয়েও তিনি বিষদ ব্যাখ্যা দেন। জাতিসংঘের মত আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের অংশগ্রহণের বিষয়গুলো অত্যন্ত সহজভাবে সারাবছর প্রবাসী বাঙালিসহ দেশের জনগণের মাঝে সংবাদের মাধ্যমে উপস্থাপনের জন্য সাংবাদিকবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান স্থায়ী প্রতিনিধি।

তিনি বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে এবং বিচক্ষণ কূটনৈতিক প্রজ্ঞায় জাতিসংঘের সাথে বাংলাদেশ অত্যন্ত ঘনিষ্ট সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। এই ঘনিষ্ট সম্পর্ক উত্তরোত্তর বৃদ্ধি এবং বাংলাদেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর আরও সাফল্যের সাথে জাতিসংঘে তুলে ধরতে স্থায়ী মিশন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে মর্মেও জানান রাষ্ট্রদূত মাসুদ।

তিনি নতুন বছর ২০১৯-এ জাতিসংঘে বাংলাদেশের যে সকল বিষয় বিশেষভাবে গুরুত্ব পাবে এবং যেসকল চ্যালেঞ্জ রয়েছে সে সমন্ধে আলোকপাত করেন। এক্ষেত্রে তিনি রোহিঙ্গা ইস্যু, এসডিজি বাস্তবায়ন, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের কথা উল্লেখ করেন।

নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের কনসাল জেনারেল মিজ্ সাদিয়া ফয়জুন্নেচ্ছা পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে কনস্যুলেটের সেবার সার্বিক বিষয়গুলো উপস্থাপন করেন। তিনি গত গতবছরে প্রবাসী বাংলাদেশীদের স্বার্থ রক্ষার যে সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন তা উল্লেখ করেন। কনস্যুলেটের স্থায়ী ভবনসহ বিভিন্ন ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথাও উল্লেখ করেন কনসাল জেনারেল।

বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি তারেক মো: আরিফুল ইসলাম মিশনের ২০১৮ সালের গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম ও অর্জনের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করেন।

অত্যন্ত আন্তরিকতাপূর্ণ এই শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় সভায় উপস্থিত সাংবাদিকগণ বাংলাদেশের নির্বাচন, জাতিসংঘে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ এবং কনস্যুলেট সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করেন।

অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের ফুল দিয়ে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রকাশিত নতুন বছরের ডায়েরি ও ক্যালেন্ডার এবং স্থায়ী মিশন প্রকাশিত ২০১৮ সালের প্রেস রিলিজ সংকলন প্রদান করা হয়। উল্লেখ্য এবারের এই অনুষ্ঠান ছাড়াও ২০১৭ এবং ২০১৮ সালে ইংরেজি বছরের শুরুতে রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেনের আমন্ত্রণে সাংবাদিকদের সাথে শুভেচ্ছা ও মত বিনিময় এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কোন্নয়ন এই আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

***

মিশনের ২০১৮ সালের গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম ও অর্জনের বিষয়ে উপ-স্থায়ী প্রতিনিধির বক্তব্য:

প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ,

আসসালামু আলাইকুম।

সবাইকে ইংরেজি নতুন বছরের শুভেচ্ছা। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ মিশনের গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম ও অর্জনসমূহ আপনাদের সামনে উপস্থাপন করছি।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জাতিসংঘের ৭৩তম সাধারণ পরিষদের উচ্চ পর্যায়ের সপ্তাহে অংশগ্রহণঃ

বিগত বছরগুলোর মত প্রধানমন্ত্রীর এবারের অংশগ্রহণও ছিল অত্যন্ত সফল ও তাৎপর্যপূর্ণ, বিশেষ করে রোহিঙ্গা সমস্যার কারণে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের বিষয়গুলো আমরা ভাগে ভাগে আলোচনা করবো। তবে সাধারণভাবে বলতে গেলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে প্রদত্ত ভাষণ ও অন্যান্য উচ্চ পর্যায়ের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহনকালে প্রদত্ত বক্তব্যে এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার/ রাষ্ট্রপ্রধানদের সাথে সভায় বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির কথা তুলে ধরেছেন যা সবার কাছে অত্যন্ত সমাদৃত হয়েছে।

রোহিঙ্গা সমস্যাঃ

২০১৮ সালে মিশনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজে ছিল রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে কাজ করা। আমরা সারা বছরই জাতিসংঘ ও জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রদের নিকট এ বিষয়ে দেন দরবার করেছি। ফলশ্রুতিতে বিষয়টি জাতিসংঘে অন্যতম আলোচিত বিষয় ছিল। জাতিসংঘের মহাসচিব রোহিঙ্গা বিষয়ে আরও শক্ত অবস্থান গ্রহণ করেছেন। জাতিসংঘে আমাদের এ সংক্রান্ত কার্যক্রম মূলতঃ দু’টি ধারার ছিলঃ সাধারণ পরিষদে এবং নিরাপত্তা পরিষদে।

আমরা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অংশগ্রহণ কাজে লাগিয়ে এবং বিশ্ব নেতৃত্বের উপস্থিতির সুযোগ নিয়ে রোহিঙ্গা বিষয়ে বিশ্ব জনমত দৃঢ়তর করতে সহায়তা করি। আপনারা জানেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁর সাধারণ পরিষদের বক্তৃতায় অত্যন্ত জোরালোভাবে রোহিঙ্গা সমস্যার বিষয়টি আবারও তুলে ধরেন এবং এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানে তিনটি সুপারিশ প্রস্তাব করেন।

সাধারণ পরিষদে এবার আমরা গতবছরের চাইতেও জোরালো একটি রেজুল্যুশন এনেছি যা বিপুল ভোটে গৃহিত হয়েছে। এতে প্রথমবারের মত মিয়ানমারের দায়বদ্ধতা বিষয়টি অর্ন্তভুক্ত হয়েছে, মহাসচিবের বিশেষ দূতের কার্যক্রমের সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এবার ওআইসি’র পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়ন রেজ্যুলেশন এর কো-স্পন্সর হয়েছে। ফলশ্রুতিতে গত বছরের চেয়ে স্পন্সর এর সংখ্যা বেড়েছে। এবার পক্ষে ভোট গতবারের চেয়ে বেড়েছে ১০টি, বিপক্ষে ভোট কমেছে। আমাদের দেনদরবারের কারণে বেশ কয়েকটি  দেশ, যারা আমাদের বিপক্ষে গত বছর ভোট দিয়েছিল এবার পক্ষে ভোট দিয়েছে। এ সবই রেজ্যুলেশনের পক্ষে বিশ্বজনমত আরও সুদৃঢ় হবার প্রতিফলন। এর পিছনে আমাদের ব্যাপক তৎপরতা ছিল। আমাদেরকে অত্যন্ত কঠিন নেগোশিয়েশন এর মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে; অনেক ধরনের সমঝোতা করতে হয়েছে; বিশেষ দূত এর অফিসের বাজেট নিয়ে নেগোশিয়েট করতে হয়েছে; বহু সদস্য রাষ্ট্রের নিকট, আঞ্চলিক গ্রুপের নিকট ধর্ণা দিতে হয়; তাদেরকে সমস্যাটি ব্যাখ্যা করতে হয়; দেশ-পর্যায়ের রেজুলেশনে অনেকেরই ভোটদানে বিরত থাকার নীতিগত অবস্থান থাকে সেটি বদলানো খুব কঠিন; তারপরও আমরা কয়েকটি দেশের ক্ষেত্রে সেটা করে দেখিয়েছি।

এবার নিরাপত্তা পরিষদে আমাদের অর্জনের দিকে ফিরে তাকাই। নিরাপত্তা পরিষদ হতে এ পর্যন্ত রেজুলেশন হয়নি, যার কারণও আপনারা জানেন। তবে আমরা নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য না হওয়া এবং রোহিঙ্গা বিষয়ে কিছু দেশের ভিন্নমত সত্ত্বেও  আগস্ট ২০১৭ পর হতে নিরাপত্তা পরিষদে এ পর্যন্ত  ১৩টি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদ ২৮ এপ্রিল হতে ১ মে ২০১৮  বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সফর করেছে যা সমস্যার গভীরতা ও ব্যাপ্তি অনুধাবনে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে কিছু সদস্য দেশ নিরপত্তা পরিষদে একটি রেজ্যুলেশন আনার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। কাজেই আমরা নিরাপত্তা পরিষদে রোহিঙ্গা সমস্যাটি জিইয়ে রাখতে সফলকাম হয়েছি। এ সবই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন ক্রমঅগ্রসরমান পদক্ষেপ যা সম্ভব হয়েছে আমাদের নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টার কারণে।

রোহিঙ্গা বিষয়ে আমাদের বিভিন্ন ধরণের কৌশলগত কার্যক্রম গ্রহণ করতে হয়েছে। সময়াভাবে তার সবটুকু আপনাদের বলা যাচ্ছে না। মোটাদাগে আমাদের কার্যক্রম ছিল : আমরা জাতিসংঘে যে ফোরামেই সুযোগ পেয়েছি রোহিঙ্গা বিষয় নিয়ে কথা বলেছি বা বলার সুযোগ করে নিয়েছি; যেখানে মিয়ানমার কথা বলেছে আমরা তার প্রত্যুত্তর দিয়েছি; মিয়ানমারের প্রোপাগান্ডা মেশিনারি যে বিশাল মিস্ইনফরমেশন ক্যাম্পেইন চালিয়েছে এবং যা এখনো চালিয়ে যাচ্ছে সেগুলো ভুল প্রমাণ করতে সদস্য রাষ্ট্রের নিকট আমরা রোহিঙ্গা সংকটের বস্তুনিষ্ট বিবরণী ও সঠিক তথ্য ও উপাত্ত বিতরণ করেছি; আমরা নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য রাষ্ট্রের সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক করেছি এবং তাদের প্রত্যেকের অবস্থানের নিরিখে সুকৌশলে আমাদের অবস্থান তুলে ধরেছি; জাতিসংঘে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে সাইড ইভেন্ট করেছি; এ সময়কালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও অন্যান্য যত উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি ঢাকা থেকে এসেছেন। তাঁদেরকে জাতিসংঘ মহাসচিব ও অন্যান্য উচ্চ পর্যায়ের নেতৃত্বে সাথে রোহিঙ্গা বিষয় নিয়ে বৈঠক করিয়েছি; মহাসচিব বারং বারই আমাদের সময় দিয়েছেন; নিরাপত্তা পরিষদ ও মহাসচিব ছাড়াও জাতিসংঘের বিভিন্ন উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি ও প্রতিনিধিদলকে আমরা কক্সবাজার সফর করিয়েছি; তাঁরা স্বচক্ষে রোহিঙ্গাদের অবস্থা দেখে তার উপর বিবৃতি দিয়েছেন, ফলশ্রুতিতে রোহিঙ্গাদের পক্ষে জনমত সুদৃঢ় হয়েছে।

সাধারণ অধিবেশন ও নিরাপত্তা পরিষদে আমাদের এ নিরন্তর, কৌশলী ও দ্বিমুখী আউটরিচ শুধু নিউইয়র্কেই সীমাবদ্ধ ছিল না। আমরা বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশী দূতাবাসসমূহ এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থিত আমাদের মিশনগুলোকে এ জন্য কাজে লাগিয়েছি। জেনেভাতে মানবাধিকার কাউন্সিলে মিয়ানমারের উপর একটি রেজ্যুলেশন বিপুল ভোটে গৃহীত হয়েছে। জেনেভাতে আমাদের স্থায়ী মিশন এ বিষয়ে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এজন্যই রোহিঙ্গা সমস্যা জাতিসংঘে এবার এতটাই আলোচিত হয়েছে।

এ সবই সম্ভব হয়েছে আমাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি ওআইসি, সৌদিআরব, তুরস্ক এবং জাতিসংঘ মহাসচিবের জোরালো সমর্থনের কারণে। গত বছরও আপনাদের বলেছিলাম, এ বছরও বলছি এ পর্যন্ত যে সাফল্য আমরা পেয়েছি তা অত্যন্ত আশাপ্রদ ও গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু যথেষ্ট নয়। জাতিসংঘের ও আন্তর্জাতিক মহলের সজাগ নজর ও সহানুভুতি আমরা এ সমস্যার উপর বজায় রাখতে এ পর্যন্ত আমরা সফলকাম হয়েছি। কিন্তু চূড়ান্ত সফলতা আসবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের মধ্য দিয়ে। সে লক্ষ্যে আমাদের প্রচেষ্টা নতুন বছরেও চলমান থাকবে।

জাতিসংঘ মহাসচিবের বাংলাদেশ সফরঃ

আগস্ট ২০১৭ তে রোহিঙ্গা সমস্যা শুরুর পর হতেই আমরা মহাসচিবকে বাংলাদেশ সফর করানোর জন্য ক্রমাগত প্রচেষ্টা চালাচ্ছিলাম। গত বছর তা সফল হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্টকে নিয়ে মহাসচিব ৩০জুন-০৩ জুলাই ২০১৮ বাংলাদেশ সফর করেছেন। তাঁরা রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন, এ  বিষয়ে কথা বলেছেন । তাঁরা বাংলাদেশের এসডিজি বাস্তবায়নের অগ্রগতিতেও সন্তোষ ব্যক্ত করেছেন।

স্বল্পোন্নত দেশের কাতার হতে উত্তরণে যোগ্যতা অর্জন ঃ

১৫ মার্চ ২০১৮ তারিখে জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভোলপমেন্ট পলিসি (সিপিডি) বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের কাতার হতে উত্তরণের শর্তাদি প্রথমবারের মত পুরণ করে বলে ঘোষণা দেয়। এটি বাংলাদেশের উন্নয়নের পথে একটি মাইলফলক, আমার উন্নয়ন প্রচেষ্টার প্রতি জাতিসংঘের একটি অনন্য স্বীকৃতি।  এটি অর্জনে মিশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল। তথ্য বিছিন্নতার (Data Discrepancy) কারণে যেন বাংলাদেশের এ শর্তাদি পূরন ব্যাহত না হয় সেজন্য সিপিডি কর্তৃক বাংলাদেশের শর্তাদি পূরণের ৎবারবি প্রক্রিয়া চলাকালে আমরা সিপিডি’র সাথে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রক্ষা করি, তাদেরকে  সঠিক এবং সর্বশেষ ডেটা দিয়ে সহায়তা করি এবং তাদেরকে বাংলাদেশ সফর করাই।  যেখানে এলডিসি ক্যাটাগরি হতে বেরিয়ে আসতে অন্যান্য দেশ অনীহা প্রকাশ করে সেখানে এ বিষয়ে বাংলাদেশের আগ্রহ এবং প্রচেষ্টা জাতিসংঘে প্রশংসিত হয়েছে।

শান্তিরক্ষা কার্যক্রমঃ

গত বছরের পুরোটাই বাংলাদেশ সৈন্য/পুলিশ সরবরাহকারী দেশগুলোরগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল। বর্তমানে আমাদের শান্তিরক্ষীর সংখ্যা ৬৯৭৮। বাজেট হ্রাসের জন্য সামগ্রিকভাবে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের সংখ্যা ২০% হ্রাস পেলেও  বাংলাদেশ শান্তিরক্ষীদেও সংখ্যা তেমনভাবে হ্রাস পায়নি। শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে যে তীব্র প্রতিযোগিতা তা সত্ত্বেও আমাদের এ অবস্থান বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের উপর জাতিসংঘের আস্থারই স্বীকৃতি। সাউথ সুদান এর আবিই (Abeyi)-তে আমরা এবছর হতে শান্তিরক্ষী পাঠানো শুরু করেছি। আমাদের নারী শান্তিরক্ষীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে; শান্তিরক্ষীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে; আমাদের মোতায়েন প্রস্তুতি বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছর আমাদের কোন শান্তিরক্ষী অভিযুক্ত হয়নি। মিশনের পক্ষ হতে আমরা জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট অফিসগুলোতে সর্বদাই কোন ওপেনিং তৈরি হলে সেখানে আমাদের শান্তিরক্ষীদের নেওয়ার জন্য প্রচেষ্টা চালাতে থাকি। নিরাপত্তা পরিষদে, যেখানে শান্তিরক্ষা মিশনগুলো খোলা বা বন্ধ এদের ম্যান্ডেট রিভিউ এবং নবায়ন ইত্যাদি বিষয়ে কৌশলগত ও নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয় সেখানে সৈন্য/পুলিশ সরবরাহকারী দেশ হিসেবে আমরা আমাদের শান্তিরক্ষীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধির পক্ষে নানাভাবে প্রচেষ্টা চালিয়েছি। আমাদের শান্তিরক্ষীদের সার্বিক কার্যক্রমের গুণগত মান বৃদ্ধির পাশাপাশি মিশনের এ সংক্রান্ত কার্যক্রম বাংলাদেশকে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে আসার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। বর্তমানে বাংলাদেশ ১টি ডেপুটি ফোর্স কমান্ডার ও ২টি সেক্টর কমান্ডার পদে অধিষ্ঠিত আছে। আমরা আমাদের শান্তিরক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করণের বিষয়টিও জোরালোভাবে শান্তিরক্ষী কার্যক্রমের নীতিগত আলোচনায় তুলে ধরি। শান্তিরক্ষীদের নিরাপত্তা রক্ষায় মালিতে আমরা নিজ খরচে মাইন প্রটেক্টেড ভিহাইকেল মোতায়েন করেছি।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের আমাদের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ জাতিসংঘ মহাসচিব সেপ্টেম্বর মাসে অ্যাকশন ফর পিসকিপিং শীর্ষক যে উচ্চ পর্যায়ের সভা আহ্বান করেন তাতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বক্তব্য দেয়ার সুযোগ দেয়া হয়। বিশ্বের হাতে গোনা কয়েকটি দেশের রাষ্ট্র/সরকার প্রধান এ বিশেষ সম্মান পান।

অভিবাসনঃ

আপনারা জানেন অভিবাসন বিষয়ে আমরা জাতিসংঘে অন্যতম সোচ্চার দেশ। আমাদের বিপুলসংখ্যক অভিবাসীদের বিষয়টি মাথায় রেখে গ্লোবাল কমপ্যাক্ট অন মাইগ্রেশন এর বছরব্যাপী নেগোশিয়েশনে আমরা অংশগ্রহন করেছি। নিউইয়র্কে ফ্রেন্ডস্ অফ মাইগ্রেশন গ্রুপ এর প্রতিষ্ঠাতা কো-চেয়ার হিসেবে আমরা এ গ্রুপের নিয়মিত সভা আয়োজন করেছি, বৈশ্বিক কম্প্যাক্ট বিষয়ে আমাদের মতামত/ প্রত্যাশার কথা জানিয়েছি; বৈশ্বিক কম্প্যাক্ট যেন একটি অর্থবহ, কার্যকর এবং অগ্রগতিশীল নীতি-কৌশল হিসেবে আর্বিভূত হয় সেজন্য জনমত প্রতিষ্ঠায় চেষ্টা করেছি; আমরা সিভিল সোসাইটি, শিক্ষাবিদ ও ব্যবসায়ী কমিউনিটি’র সঙ্গেও সভা করেছি। ফলশ্রুতিতে অভিবাসীদের মানবাধিকার ও কল্যাণ, অভিবাসন ব্যবস্থাপনা, মানুষের বিচরণ (human mobility), বিভিন্ন ধরণের মানুষের একত্র যাত্রা (large movement of people) বিষয়গুলো গ্লোবাল কমপ্যাক্ট (Global Compact)-এ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

উন্নয়নঃ

আমাদের নিজস্ব সম্পদ দিয়ে এসডিজি বাস্তবায়ন প্রচেষ্টা বিশ্বমহলে বিশেষ সমাদৃত হয়েছে। সামাজিক ক্ষেত্রে বিশেষ করে অটিজম, যুব উন্নয়ন, ড্রাগ ব্যবহার প্রতিরোধ, নারীর ক্ষমতায়ন, ডিজ্অ্যাবিলিটিজ্, সামাজিক নিরাপত্তা জাল, তথ্যে প্রবেশাধিকার, সৃজনশীল সরকারি সেবা প্রদান ইত্যাদি বিষয়ে আমাদের অর্জন জাতিসংঘে ক্রমাগতভাবে স্বীকৃত হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন পরবর্তী চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলাতে যেন এলডিসি’র দেশগুলো প্রয়োজনীয় সহায়তা পায় সে বিষয়ে আমরা ২০১৮ তেও সোচ্চার ছিলাম। গত সেপ্টেম্বরে মালাউই (Malawi)–র নিকট এলডিসি’র চেয়ার-এর দায়িত্ব হস্তান্তরের পূর্ব পর্যন্ত আমরা ২০৩০ গ্লোবাল ডেভোলপমেন্ট এজেন্ডা ও এসডিজি বাস্তবায়নে স্বল্পোন্নত দেশসমূহের স্বার্থ সংরক্ষণের বিষয়ে জোরালো ভূমিকা পালন করছি। এলডিসি’র দেশগুলোর চাহিদা যেমনঃ অর্থায়ণ, ওডিএ, বৈদেশিক বাণিজ্য, সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ, প্রযুক্তির কথা জাতিসংঘ ও আমাদের উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে তুলে ধরছি। আমাদেও চ্যালেঞ্জগুলোর কথা , আমাদের উদ্বেগেগুলোর কথা তুলে ধরছি এবং এগুলোর সমাধানে উন্নতবিশ্বের সহায়তা কামনা করছি। এলডিসি’র দেশগুলোর জন্য টেকনোলজি ব্যাংকটির কার্যক্রম শুরু করার পেছনে আমাদের নেতৃস্থানীয় ভূমিকা সর্বত্র স্বীকৃত হয়েছে।

জাতিসংঘে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের ৩০ বছর পূর্তি উদযাপন (২৫ এপ্রিল ২০১৮) :

বিগত অনেকগুলো বছরের মধ্যে একটি ছিল বাংলাদেশ মিশন কর্তৃক জাতিসংঘে আয়োজিত সবচেয়ে মর্যাদাকর অনুষ্ঠান যাতে মহাসচিব ও সাধারণ পরিষদের প্রেসিডেন্ট উভয়েই উপস্থিত ছিলেন। দু’জনই তাঁদের বক্তব্যে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অবদান ও রোহিঙ্গাদের আশ্রয় প্রদানের পাশাপাশি জাতিসংঘের বিভিন্ন কার্যক্রমে বাংলাদেশের অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

জাতিসংঘের নেতৃত্বকে বাংলাদেশ বিষয়ে অবহিত রাখাঃ

বছরব্যাপি মিশন জাতিসংঘের নেতৃত্বের সঙ্গে নিয়মিত এবং কৌশলগত যোগাযোগ রক্ষা করেছে।  জাতিসংঘ সব সময় বাংলাদেশ বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাবই প্রদর্শন করেছে।

রেজুল্যুশন ফ্যাসিলেশন (facilitation) :

জাতিসংঘের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নেগোসিয়েশন সমূহ পরিচালনার মাধ্যমে সহমত আনয়ন বহুপাক্ষিক কুটনীতির একটি অন্যতম মর্যাদাকর কিন্তু কঠিন কাজ। প্রতিবছর অল্প কিছুসংখ্যক দেশকে জাতিসংঘে তাঁদের কার্যক্রমের ভিত্তিতে সাধারন পরিষদ বা ইকোসক -এর প্রেসিডেন্ট এ দায়িত্ব প্রদান করে। এটিকে জাতিসংঘের ভাষায় facilitation বলে। আমরা এবছর এরকম তিনটি রেজুল্যুশন/ঘোষনাপত্র ফ্যাসিলেশন (facilitation)-এর দায়িত্ব পেয়েছি এবং সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছি।  এটি জাতিসংঘে আমাদের দক্ষতাপূর্ণ কার্যক্রমের স্বীকৃতি স্বরুপ।

নেতৃত্ব প্রদানকারী ভূমিকা :

২০১৮ সালে আমরা ওআইসি’র নিউইয়র্ক চ্যাপ্টার এর চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করছি। এর মাধ্যমে আমরা মুসলিম উম্মাহ সমুন্নত রাখা এবং ওআইসি’র জন্য সংবেদনশীল বেশ কিছু বিষয় যেমন : প্যালেস্টাইন, রোহিঙ্গা সমস্যা ইস্যুতে মুসলিম বিশ্বকে নেতৃত্ব দিয়েছি অনেক সময় জোরালো বিরোধিতার মুখেও। আমাদের এ ভূমিকা নিউইয়র্কস্থ ওআইসি সদস্য মিশনগুলো কর্তৃক প্রশংসিত হয়েছে।

নির্বাচনে জয়লাভ :

বাংলাদেশ গত বছর জাতিসংঘের চারটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থায় নির্বাচিত হয়েছে : হিউম্যান রাইটস্ কাউন্সিল এ ২০১৯-২০২১ মেয়াদে: কমিশন অব স্টাটাস অব উইমেন -এ ২০১৯-২০২২ মেয়াদে; এবং ইউনিসেফ ও ইউএন উইমেন এর নির্বাহী বোর্ড এ ২০১৯-২০২১ মেয়াদে। এটি বহুপাক্ষিক  কুটনীতিতে একটি দায়িত্ববান দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উপর বিশ্বসম্প্রদায়ের আস্থারই প্রতিফলন।

শান্তির সংস্কৃতি রেজুলেশন:

বাংলাদেশ উত্থাপিত এ বার্ষিক ফ্লাগশীপ রেজুলেশনটি বিপুল সংখ্যক কো-স্পন্সরসহ এ বছর আবারও সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। পর পর ১৯ টি বছর ধরে এটি গৃহীত হওয়া শান্তি বিনির্মানে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অবদানেরই স্বীকৃতি। আমরা এবার রেজুলেশনটিতে শান্তির সংস্কৃতির উপর ডিক্লারেশন এবং প্রোগ্রাম অব অ্যাকশন এর ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ এ সাধারণ পরিষদের একটি উচ্চ পর্যায়ের অনুষ্ঠান আয়োজন এর উপর সহমত আনয়নে সমর্থও হই। এছাড়া টেকসই শান্তি এবং শান্তির সংস্কৃতি এর মধ্যকার পরিপূরক যোগসূত্রের বিষয়টি এতে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

শান্তি বিণির্মাণ ও সহিংসতা প্রতিরোধ এবং নিরাপত্তাঃ

বিশ্বশান্তি নিশ্চিতকরণে বাংলাদেশের নীতিগত অবস্থানের কারনে এবং জাতিসংঘ মহাসচিব ও সাধারণ পরিষদের প্রেসিডেন্টের প্রাধিকারের সঙ্গে কৌশতগত সঙ্গতি রক্ষাকল্পে আমরা জাতিসংঘ মহাসচিবের সার্চ ইন পিস ডিপ্লোমেসি প্রচেষ্টাকে সর্বোত সমর্থন দিয়ে গেছি। শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ, শান্তি বির্নিমানে পিসবিল্ডিং কমিশন, পিসবিল্ডিং ফান্ডে আমাদের অবদান, নিরাপত্তা পরিষদসহ জাতিসংঘের বিভিন্ন আলোচনায় এবং বিভিন্ন গ্রƒপস্ অফ ফ্রেন্ডস্ এর মাধ্যমে আমরা টেকসই শান্তির ধারণাটিকে প্রতিষ্ঠিত করা এবং জাতিসংঘের শান্তি ও নিরাপত্তা স্তম্ভটিকে জোরদার করার চেষ্টায় সহায়তা করেছি। গত এপ্রিল মাসে সাধারণ পরিষদে টেকসই শান্তির উপর অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের অনুষ্ঠানে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে সাধারণ পরিষদের প্রেসিডেন্ট কর্তৃক প্রেরিত বিশেষ আমন্ত্রণ এবং বাংলাদেশকে এ সংক্রান্ত রেজ্যুলেশন ফ্যাসিলেটেশন -এর দায়িত্ব অর্পন মিশনের উপরোক্ত অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ।

জাতিসংঘের সংস্কারঃ

বর্তমান মহাসচিব দায়িত্ব গ্রহণের পর জাতিসংঘের সংস্কার এর উপর বিশেষ জোর দিয়েছেন। শান্তি ও নিরাপত্তা কাঠামো, অভ্যন্তরীন ব্যবস্থাপনা সংস্কার এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন ব্যবস্থাপনা সংস্কার-এ তিনটি মূলধারায় সংস্কার চলছে। সংস্কারে বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশসমূহের স্বার্থ যেন রক্ষিত হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে এ প্রক্রিয়াটিতে আমরা সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছি এবং মহাসচিবের উদ্যোগে সহায়তা প্রদান করে চলেছি।

 

সন্ত্রাস প্রতিরোধ ও সহিংস উগ্রবাদ দমনঃ

আমরা এ বিষয়ে জাতিসংঘের সকল আলোচনায়, নীতি-আদর্শ নির্ধারণী (norm setting) কার্যক্রমে এবং সংশ্লিষ্ট ফোরামে সক্রিয় আছি। আমরা জাতিসংঘের নতুন সৃষ্ট অফিস অফ দ্যা কাউন্টার টেরোরিজম ছাড়াও জাতিসংঘের বিভিন্ন সন্ত্রাস দমন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অনেকদিন ধরেই নিবিড়ভাবে কাজ করছি। তাদের টিমকে বাংলাদেশে সফর করাচ্ছি; সক্ষমতা বিনির্মাণ-এ তাদের সহায়তা নিচ্ছি। এ বিষয়ে আমাদের দেশে যে কাজগুলো হচ্ছে সেগুলো তাদের অবহিত করছি; আমাদের ‘সমগ্র-সমাজকে নিয়ে কাজ করার দৃষ্টিভঙ্গি’কিভাবে কাজ করছে তা ব্যাখ্যা করছি। সন্ত্রাস প্রতিরোধ ও সহিংস উগ্রবাদ দমনে বাংলাদেশের ‘ জিরো টলারেন্স পলিসি’র প্রতিফলনকারী ও সকল কার্যক্রম জাতিসংঘে প্রশংসিত হয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তনঃ

জাতিসংঘের সদস্যরাষ্ট্রদের সঙ্গে নিয়ে সামষ্টিকভাবে প্যারিস এগ্রিমেন্ট বাস্তবায়নের বিষয়ে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং এজন্য জাতিসংঘের সকল সংশ্লিষ্ট ফোরামে আমরা সোচ্চার আছি। জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের ঝুঁকি সংকুলতা বিবেচনায় এ বিষয়ে চলমান নতুন কুটনৈতিক প্রচেষ্টা গ্লোবাল প্যাক্ট অন দ্যা এনভাইরনমেন্ট (Global Pact on the Environment)- কে আমরা সমর্থন দিয়ে যাচ্ছি।

বিভিন্ন থিমেটিক বিষয়ে আইনগত প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণঃ

সুনীল অর্থনীতিতে আমাদের প্রাধিকার বিবেচনায় এবং টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতকরণে সামুদ্রিক অনুসন্ধান (Marine Exploration) আমাদের অমিত সম্ভাবনা; টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতকরণে সামুদ্রিক সম্পদের সুষ্ঠু সংরক্ষণ ও টেকসই ব্যবহার; মানবকল্যাণে মানব সভ্যতার সাধারণ ঐতিহ্য (Common Heritage of Mankind) -এর ব্যবহার বিষয়ে বিভিন্ন আইনগত বিধিবিধান ও রীতি-নীতি তৈরির কাজ জাতিসংঘে চলছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমায় সমুদ্র তলদেশে খনিজ সম্পদ উত্তোলন বিষয়ে আন্তর্জাতিক বিধি বিধান কাজও চলমান। আমরা বাংলাদেশের পক্ষ হতে এ প্রক্রিয়াগুলোর নেগোসিয়েশনে অংশগ্রহণ করেছি যাতে আমাদের স্বার্থ রক্ষিত হয়, আমাদের সক্ষমতার ঘাটতির কারণে যেন আমরা সামুদ্রিক সম্পদের ভান্ডার হতে বঞ্চিত না হই।

৭১-এর গণহত্যাঃ

১৯৭১ সালে বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যা আন্তর্জাতিকীকরণের লক্ষ্যে আমরা বছরব্যাপী নানাবিধ কাজ করেছি। জাতিসংঘের যেসকল রাষ্ট্র গণহত্যার শিকার হয়েছে তারা কিভাবে বিষয়টি আন্তর্জাতিকীকরণ করেছে এ বিষয়ে তাদের অভিজ্ঞতার কথা জেনেছি; তাদের সুপারিশ নিয়েছি; তাদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছি এবং জাতিসংঘের গণহত্যা দিবস উদ্যাপনে অংশ নিয়েছে; আমাদের প্রধানমন্ত্রীর বাণী তাঁদেরকে প্রেরণ করেছি; জাতিসংঘের গণহত্যা প্রতিরোধ কার্যালয়ের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষা করেছি। আমরা প্রথমবারের মত গতবছরের ২৫ মার্চ মিশনে গণহত্যা স্মরণ দিবস পালন করেছি যাতে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র, গণহত্যা এর উপর যুক্তরাষ্ট্রের স্বনামধন্য বিশেষজ্ঞ ও শিক্ষাবিদ অংশগ্রহন করেন।

নিরাপত্তা পরিষদের কার্যক্রমে অংশগ্রহণঃ

আমরা রোহিঙ্গা, নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা এবং যুব, শান্তি ও নিরাপত্তা ইস্যু ছাড়াও নিরাপত্তা পরিষদ আয়োজিত মাসওয়ারী প্রায় সকল উন্মুক্ত আলোচনাতেই অংশগ্রহন করেছি এবং বক্তব্য দিয়েছি যাতে আমরা সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরেছি। এটি নিরাপত্তা পরিষদে আমাদের দৃশ্যমানতা এবং গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি করেছে যা নিরাপত্তা পরিষদসহ জাতিসংঘে আমাদের বিভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সমর্থন আদায়ে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস:

আমরা গত বছর দ্বিতীয়বারের মত জাতিসংঘে ভাষা শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠান আয়োজন করি। এতে বিভিন্ন সদস্য রাষ্ট্রের কুটনীতিক, জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের নেতৃবৃন্দ এবং বহুভাষাবিদগণ অংশগ্রহণ করেন। সাধারণ পরিষদের বহুভাষাবাদ শীর্ষক একটি রেজুলেশনেও আমাদের প্রচেষ্টায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের উল্লেখ করা হয়।

গণ কূটনীতি:

বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন বিশ্ববাসীর নিকট তুলে ধরার জন্য এবং আমাদের জাতীয় স্বার্থ সমুন্নত রাখতে আমরা বছরব্যাপি জাতিসংঘে আমাদের বিভিন্ন প্রাধিকার বিষয় যেমন: অভিবাসন. অটিজম, গনহত্যা, এসডিজি বাস্তবায়ন, তথ্যে প্রবেশাধিকার, সৃজনশীল সরকারি সেবা প্রদান সমুদ্র সম্পদের সংরক্ষণ ও টেকসই ব্যবহার নিয়ে জাতিসংঘের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং খ্যাতনামা থিঙ্ক ট্যাঙ্কদের সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন ইভেন্ট আয়োজন করেছি। নিউইয়র্কভিত্তিক বিভিন্ন থিঙ্ক ট্যাঙ্ক এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর সঙ্গেও আমরা আমাদের যোগাযোগ বৃদ্ধি করেছি এবং যৌথ অনুষ্ঠান আয়োজন করেছি।

মিডিয়া যোগসুত্রঃ

আমরা বছরব্যাপি চেষ্টা করেছি জাতিসংঘে আমাদের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম, অবদান বা অর্জনকে আপনাদের নিকট পৌঁছাতে বা সেগুলো আপনাদের দ্বারা কাভার করাতে। আমাদের পক্ষ এ আউটরিচ আরও বৃদ্ধির জন্য আমরা এ বছরও চেষ্টা করবো। আমরা এ বিষয়ে আপনাদের সহযোগিতা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করছি এবং আরও বেশী সহযোগিতা পাবার আশা রাখছি।

বিগত এক দশকে বাংলাদেশের বিপুল আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন জাতিসংঘে বাংলাদেশকে ইতোমধ্যেই একটি সম্মানজনক আসনে আসীন করেছে। আমরা ২০১৮ তে তা আরও সমুন্নত করার চেষ্টা করেছি। যেখানে শরণার্থী এবং জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মানুষকে সাহায্য দেয়ার বিষয়ে এমনকিু উন্নত দেশগুলোর মধ্যেও চরম অনীহা দেখা গেছে সেখানে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় প্রদানের কারণে বিশ্ববাসী বাংলাদেশকে নতুনভাবে দেখছে। এটি জাতিসংঘে আমরা ভীষণভাবে অনুভব করছি। ২০১৯ সালেও আমাদের প্রচেষ্টা থাকবে আমাদের প্রফাইল আরও বৃদ্ধি করার। এ বিষয়ে আপনাদের সহযোগিতা একান্তই কাম্য।

***

কনসাল জেনারেল উপস্থাপিত তথ্য :

বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল, নিউইয়র্ক

২২ জানুয়ারী ২০১৯

শুভ ইংরেজি নববর্ষ – ২০১৯

বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল, নিউইয়র্কে গত জুন মাসে কনসাল জেনারেল হিসেবে যোগদানের পর পরই প্রিয় সাংবাদিক ভাই-বোনদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমে আমার যাত্রা শুরু করি। সেই অবধি আপনাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা পেয়ে যাচ্ছি, তার জন্য আপনাদের কাছে আমি আন্তরিকভাবে  কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি এবং আমি আশাবাদী আপনাদের সহযোগিতার হাত অব্যাহত থাকবে।

কনস্যুলেট জেনারেল, নিউইয়র্ক এর আওতাধীন অঙ্গরাজ্যসমূহে (নিউইয়র্ক, নিউজার্সী, নিউহ্যাম্পশায়ার, কানেকটিকাট, ম্যাসাচুসেটস, মেইন, ভারমন্ড এবং রোডআইল্যান্ড) এ বসবাসকারী বাংলাদেশী ও বাংলাদেশ-আমেরিকান নাগরিকদের নিরবচ্ছিন্ন কনস্যুলার সেবা প্রদান করে যাচ্ছে। জনকল্যাণমূলক কনস্যুলার সেবার পাশাপাশি অন্যান্য অর্থনৈতিক, বাণিজ্য সংক্রান্ত এবং সংস্কৃতি বিষয়ক কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। “Diaspora Diplomacy”-কে সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করে বাংলাদেশ-আমেরিকান বিভিন্ন পেশাজীবি, ব্যক্তি ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে বাংলাদেশ কনস্যুলেট সাম্প্রতিক কালে যোগাযোগ বৃদ্ধি করেছে।

কনস্যুলেটের সেবার মান বৃদ্ধি, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা এবং কনস্যুলার সেবা গ্রহণকারীদের নিরাপত্তা প্রদানের বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হয়েছে। কনস্যুলার কার্যক্রমকে অধিকতর জন বান্ধব ও জনকল্যাণমূলক কার্যক্রম হিসেবে বাস্তবায়নের আন্তরিক চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে এবং এ সংক্রান্ত গত ৬ মাসে গৃহীত কিছু পদক্ষেপ তুলে ধরা হলো:

কনস্যুলার সেবার মান বৃদ্ধির জন্য কনস্যুলার হলে ফ্রন্ট ডেস্ক স্থাপন করা হয়েছে। ফ্রন্ট ডেস্কে দায়িত্বরত কর্মী কনস্যুলার সেবা গ্রহণ করতে আসা দৈনিক প্রায় ৩০০ জনের নাম, ফোন নম্বর ও সেবার ধরণ রেজিষ্ট্রেশন করেন।

কনস্যুলার সেবা গ্রহণকারীদের নিরাপত্তা প্রদানের বিষয়টি বিবেচনা করে কনস্যুলেটের সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা বৃদ্ধি করা হয়েছে। যেমন- আর্চওয়ে স্থাপন, নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগ।

কনস্যুলার হলে ‘মতামত/Opinion Box’স্থাপন করা হয়েছে। এখানে যে কেউ সেবা সংক্রান্ত কনস্যুলার মতামত ও পরামর্শ দিতে পারেন। ইতোমধ্যেই আমরা সেবা গ্রহীতাদের কাছ থেকে মূল্যবান মতামত পাচ্ছি, যা আমাদের কার্যক্রমে সহায়তা করছে।

কনস্যুলার হলে survey of consular activities এর জন্য ‘I-Pad’ স্থাপন করা হয়েছে। এখানে যে কেউ আমাদের সেবার মানের উপর Rate প্রদান করতে পারেন।

অধিকতর কনস্যুলার সেবা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে অতি সম্প্রতি কনস্যুলার হলে ইন্টারন্টেসহ একটি Computer এবং Printer স্থাপন করা হয়েছে। এর ফলে, যে কোন সেবাপ্রার্থী কনস্যুলেট হলে বসে অন-লাইনে আবেদন ফরম পুরন করতে পারেন।

কনস্যুলার সেবা কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে সার্বক্ষনিক একজন অফিসার কনস্যুলার হল মনিটর করেন।

রিশেপসনিস্টের টেলিফোন নিয়মিতভাবে পর্যবেক্ষন করা হয় যাতে সর্বোচ্চ সংখ্যক টেলিফোন গ্রহণ করা সম্ভব হয় এবং একটি অটোমেটেড ফোন কলের রেজিস্টার চালু করা হয়েছে এবং ফোন কল রেকর্র্ডিং এর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

নিয়মিতভাবে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল এর ওয়েবসাইট ও ফেসবুক একাউন্টহাল -নাগাদ করা হয়, যাতে কনস্যুলার সেবাপ্রার্থীগণ প্রয়োজনীয় তথ্য পেয়ে থাকেন।

মৃতদেহ বাংলাদেশে প্রেরণের ক্ষেত্রে বা এধরনের কোন ডকুমেন্টস সত্যায়নের জন্য বাংলাদেশ কনস্যুলেট ২৪/৭ ভিত্তিতে প্রদান করে থাকে।

গত ২০১৮ সালে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল নিউইয়র্ক প্রায় ৩০,০০০ জনকে নির্ধারিত সরকারী ফি এর বিনিময়ে বিভিন্ন ধরণের সেবা প্রদান করেছে। বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, সরকারী ফি ছাড়াও কনস্যুলেট আরো বিভিন্ন ধরনের সেবাপ্রদান প্রদান করছে যথা: এলাইভ সার্টিফিকেট প্রদান, মৃতব্যক্তির ডকুমেন্টস সত্যায়ন এবং বিভিন্ন ধরনের তথ্য সেবা।

প্রায় প্রতি সপ্তাহেই সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলিতে কনস্যুলেটের আওতাধীন বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে কনস্যুলার ক্যাম্পের মাধ্যমে সেবাপ্রদান করা হয়ে থাকে।

নিউইয়র্কে একটি নিজস্ব বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল স্থাপনের প্রক্রিয়াটি সক্রিয়ভাবে অব্যাহত রয়েছে। উলেখ্য, এটি বর্তমান সরকারের একটি অগ্রাধিকার কার্যক্রম।

বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল নিয়মিতভাবে বিভিন্ন জাতীয় দিবসসমূহ যথাযথ মর্যাদায় পালন করছে। উল্লখ্য, ২০১৮ সালে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের সাথে যৌথভাবে ‘স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণ’এবং ‘বাংলাদেশ উন্নয়ন মেলা-২০১৮’পালন করা হয়, যা ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে।

বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক এবং ঐতিহ্য বাহী সংস্কৃতিকে আমেরিকার মূলধারার সাথে পরিচিত করার জন্য বিভিন্ন রকম প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম চলছে।

কনসাল জেনারেল বিভিন্ন সিটির মেয়র, বোরো প্রেসিডেন্ট, স্থানীয় নীতি নির্ধারিক, নিউইয়র্ক সিটির পুলিশ কমিশনার ও মূলধারার আমেরিকান অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক অগ্রগতি, সার্বিক বাংলাদেশের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরেন। এছাড়াও বাংলাদেশ-আমেরিকান নাগরিকদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ও তাদের কল্যাণে একযোগে কাজ করার অনুরোধ জানান।

নিউইয়র্ক ও পার্শ¦বর্তী অঙ্গরাজ্যে বাংলাদেশের ভাবমূতি বৃদ্ধির জন্য আরো কিছু সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে, যা বর্তমানে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

স্বাধীনতার স্থপতি ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’বিনির্মাণের লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি অসাম্প্রদায়িক ও উন্নত দেশ গঠনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। এরই ধারাবাহিকতায় ‘Diaspora Diplomacy’-র মাধ্যমে ‘উন্নত বাংলাদেশ’গঠনের অভিষ্ঠ সেই লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য বাংলাদেশ কনস্যুলেট, নিউইয়র্ক সচেষ্ট রয়েছে।

আপনাদের সহযোগিতার জন্য আবারো আন্তরিক ধন্যবাদ এবং আশা করছি আপনাদের গঠনমূলক সাংবাদিকতা বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে অনুপ্রেরণা যোগাবে।

***