সন্ত্রাস দমন ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে একযোগে কাজ করে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ -জাতিসংঘে রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন।

নিউইয়র্ক, ২৮ মার্চ ২০১৯ :

‘একটি দায়িত্বশীল ও প্রতিশ্রুতিশীল দেশ হিসেবে বিদেশী সন্ত্রাসী গ্রুপের ট্রানজিট, অভয়ারণ্য বা নিরাপদ আশ্রয় -কোনোটিতেই বাংলাদেশ নিজভূমি ব্যবহৃত হতে দিবে না এবং সন্ত্রাস দমন ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে বাংলাদেশ বৈশ্বিক মান বজায় রেখেই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে কাজ করে যাবে’ -আজ নিরাপত্তা পরিষদে ‘সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ ও দমন’শীর্ষক এক উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে একথা বলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন।

সন্ত্রাস দমনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘জিরো টলারেন্স নীতি’র কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত মাসুদ বলেন, সন্ত্রাস দমন ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে ‘বাংলাদেশ মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন’ও ‘সন্ত্রাস দমন আইন’প্রণয়নের পাশাপাশি এর তদন্ত ও সার্বিক কার্যক্রম সমন্বয়ের জন্য মন্ত্রী পরিষদ পর্যায়ের টাক্স ফোর্স গঠন করেছে। এছাড়া ‘বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট’কে সময়োপযোগী করা হয়েছে। পুলিশ বাহিনীতে সৃষ্টি করা হয়েছে ‘কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম’ইউনিট।

তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক দায়বদ্ধতা ও সহযোগিতার অংশ হিসেবে ‘ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন ফর দ্যা সাপ্রেশন অব দ্য ফাইন্যান্সিং অব টেরোরিজম’এবং এতদ্সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা পরিষদের রেজুলেশনসমূহ প্রতিপালনে বাংলাদেশ প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন, প্রতিরোধ ও দমনে পদক্ষেপ গ্রহণসহ সম্ভাব্য সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। জাতিসংঘের সন্ত্রাস-বিরোধী কনভেনশন/প্রটোকলের ১৪টির মধ্যে ১৪টিতেই বাংলাদেশ সম্মতি জ্ঞাপন করেছে। এছাড়া জাতিসংঘের সন্ত্রাস দমন কমিটি, সন্ত্রাস দমন কমিটির নির্বাহী কার্যালয়, অনুমোদন পরিবীক্ষণ বিভাগ এবং সন্ত্রাস দমন বাস্তবায়ন টাক্সফোর্স এরসাথে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এছাড়া আমাদের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট মানি লন্ডারিং সংক্রান্ত এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ, ফাইনানসিয়াল অ্যাকশন টাক্স ফোর্স ও ব্রাসেলস্ ভিত্তিক এগমন্ট গ্রুপের সাথে অত্যন্ত ঘনিষ্টভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

সন্ত্রাসবাদ দমন ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে সক্ষমতা বিনির্মাণ, সচেতনতা সৃষ্টি, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময়, তদারকিসহ সার্বিক কার্যক্রম নিবিড়ভাবে সমন্বয় ও পর্যবেক্ষণ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ যাতে সন্ত্রাসবাদ বা সন্ত্রাসে অর্থায়ন কার্যক্রম কোনোভাবেই মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে মর্মে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত মাসুদ।

জাতিসংঘের মার্চ মাসের সভাপতি ফ্রান্স এই উন্মুক্ত আলোচনার আয়োজন করে। একই দিনে নিরাপত্তা পরিষদে সন্ত্রাসে অর্থায়ান প্রতিরোধ সংক্রান্ত নতুন একটি রেজুলেশন -২৪৬২ সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।

***