চলতি এইচএলপিএফ উপলক্ষে উপাত্ত-বিপ্লব বিষয়ক সাইড ইভেন্ট আয়োজন করল বাংলাদেশ – উপযুক্ত কর্মপরিবেশ ও যুব-কর্মসংস্থান নিশ্চিতকল্পে উপাত্ত-বিপ্লবের কোনো বিকল্প নেই -আলোচকগণের মন্তব্য

নিউইয়র্ক, ১৫ জুলাই ২০১৯ :
জাতিসংঘ সদরদপ্তরে চলতি উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক ফোরাম (এইচএলপিএফ) এর বিভিন্ন প্লাটফর্মে সক্রিয় ও ফলপ্রসূ অংশগ্রহণের পাশাপাশি বাংলাদেশ আজ যুব-সম্প্রদায়কে কেন্দ্রবিন্দুতে রেখে ‘সকলের জন্য উপযুক্ত কর্মপরিবেশ নিশ্চিতের জন্য উপাত্ত-বিপ্লব (Data Revolution for Ensuring Decent Work for all with a Focus on Youth)’ শীর্ষক এক সাইড ইভেন্টের আয়োজন করে। এতে সহ-আয়োজক ছিল জাতিসংঘে নিযুক্ত ডেনমার্ক স্থায়ী মিশন, জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিষয়াবলী বিভাগ (UNDESA), জাতিসংঘের দক্ষিণ এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশন (UNESCAP), জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (UNDP), জাতিসংঘ মূলধন উন্নয়ন তহবিল (UNCDF) ও আইএলও। সহ-আয়োজক হিসেবে বেসরকারি সংস্থাসমূহের মধ্যে ছিল অ্যাকশন এইড, রেস্টলেস্ ডেভোলপমেন্ট ইউকে, ভাইটাল স্ট্রাটেজিস্ এবং সাউথ-সাউথ নেটওয়ার্ক ফর পাবলিক সার্ভিস ইননোভেশন (SSN4PSI)।

সাইড ইভেন্টটির অন্যতম আলোচক ছিলেন বাংলাদেশের পরিকল্পনা মন্ত্রী মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান এমপি। তিনি বাংলাদেশে উপাত্ত-বিপ্লবের উদাহরণ হিসেবে ‘এসডিজি ট্রাকার’ এর কথা উল্লেখ করেন। যুবসম্প্রদায়সহ সকলের জন্য যথোপযুক্ত কর্মপরিবেশ নিশ্চিতে অর্থাৎ টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ৮.৫ ও ৮.৬ বাস্তবায়নে উপাত্তের ব্যবহার ও সন্নিবেশন কতটা ফলপ্রসূ ভূমিকা রেখেছে তা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “উপাত্ত (data) আপনাকে সমন্বয় করার সুবিধা দিবে যা উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য; যদি কিনা আপনি উপাত্ত বিনিময় করেন”। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উপাত্ত বিপ্লব হতে পারে অন্যতম একটি হাতিয়ার মর্মে মন্তব্য করেন পরিকল্পনা মন্ত্রী।

বাংলাদেশে এসডিজি বাস্তবায়নের মুখ্য সমন্বয়কারী আবুল কালাম আজাদ সাইড ইভেন্টটিতে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন এবং এটি সঞ্চালনা করেন। সাইড ইভেন্টটির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য উপস্থাপন করে এসডিজি’র মুখ্য সমন্বয়কারী আলোচকবৃন্দ ও অংশগ্রহণকারীদের আলোচনা, মতবিনিময় ও জিজ্ঞাসার জন্য বেশকিছু বিষয়ের অবতারণা করেন। এগুলো হল: ১) কিভাবে সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহ সকলের জন্য বিশেষ করে যুবদের জন্য যথোপযুক্ত কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সামগ্রিক ডেটা সংগ্রহ ও সমন্বয়ের টেকসই ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারে। ২) নীতি-নির্ধারকগণের সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকার কিভাবে উপাত্ত বিশ্লেষণ প্লাটফর্ম সৃষ্টি করতে পারে। ৩) উপযুক্ত কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে যাতে কেউ বাদ না পড়ে তা নিশ্চিতে কিভাবে উপাত্তের সম্ভাবনাসমূহকে সরকারি প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি খাত, সিভিল সোসাইটি, এবং শিক্ষাবিদ ও গবেষকগণ কাজে লাগাতে পারেন। ৪) উপযুক্ত কর্মপরিবেশ সৃষ্টিতে উপাত্তের ব্যবহার ও সংগ্রহের জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতার কার্যকর পদক্ষেপ কী কী হতে পারে। ৫) সকলের জন্য উপযুক্ত কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকারসমূহকে উপাত্তের সঠিক ধারণক্ষমতা ও নীতিমালা তৈরিতে সহযোগিতাকল্পে জাতিসংঘ ব্যবস্থার ভূমিকা কী হতে পারে।

বাংলাদেশের পরিকল্পনা মন্ত্রীর পাশাপাশি উপরিউক্ত এসকল বিষয়ে আলোচনা করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন, ডেনমার্কের যুব প্রতিনিধি ক্যাসপার পেডারসন (Casper Pederson), বাংলাদেশের এটুআই এর পলিসি অ্যাডভাইজর আনির চেীধুরী, ইউএনডেসার ডিজিটাল গভের্ণমেন্ট শাখার প্রধান ভিনসেনজো অ্যাকোয়ারো, ইউএনএসকাপ এর পরিবেশ ও উন্নয়ন নীতিমালা বিভাগের প্রধান ড. কাটনকা উইনবারজার, ইউএনসিডিএফ এর ইনক্লুসিভ ফাইনান্স টিমের সদস্য রবিন গ্রাভেজটেইজন্, ভাইটাল স্ট্রাটেজিস, নিউইয়র্ক এর উপ-পরিচালক রিচার্ড ডেলানি, অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডাইরেক্টর ফারাহ্ কবীর, আইএলও এর এমপ্লয়মেন্ট এন্ড লেবার মার্কেট পলিসি’র প্রধান মিজ্ শুক্তি দাসগুপ্তা। এসকল আলোচকগণ উপাত্ত বিপ্লবের বিভিন্ন দিক নিয়ে আন্তর্জাতিক এই প্লাটফর্মে আলোকপাত করেন। তাঁরা সকলেই উপযুক্ত কর্মপরিবেশ ও যুব-কর্মসংস্থান নিশ্চিতকল্পে উপাত্ত-বিপ্লবের কোনো বিকল্প নেই মর্মে মত প্রকাশ করেন।

জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন বলেন, “ বাংলাদেশে প্রতিবছর ২০ লাখেরও বেশি তরুন জব মার্কেটে প্রবেশ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসমতা দূর, সমাজের সকলকে একীভূত করে উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন, জনগণের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যথোপযুক্ত কর্মপরিবেশ সৃষ্টির উপর সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করেছেন। আমরা ইতোমধ্যেই এলডিসি ক্যাটেগরি থেকে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করে উন্নয়নশীল দেশ অভিমূখে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলেছি। আমাদেরকে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে হচ্ছে। এমন সময় সবচেয়ে যেটি বেশি প্রয়োজন তা হল উপাত্ত বিপ্লব। আর এক্ষেত্রে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ও উন্নয়ন সহযোগী দেশ ও সংস্থাসমূহের শক্তিশালী সমন্বয় ও সহযোগিতা প্রয়োজন”।

সাইড ইভেন্টটির কি-নোট স্পীকার আনির চৌধুরী উপাত্ত বিপ্লবের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উত্তম অনুশীলনসমূহ তথ্য-চিত্রের মাধ্যমে প্রদর্শন করেন। উপাত্তকে কাজে লাগিয়ে কীভাবে সরকারি ব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তন আনা যায় তা তুলে ধরেন এটুআইএর এই পলিসি অ্যাডভাইজর।

অনুষ্ঠানটিতে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রের কূটনীতিকবর্গ, জাতিসংঘের কর্মকর্তা, বিভিন্ন যুব প্রতিনিধিসহ বিপুল সংখ্যক বিদেশী অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ সরকারের সিনিয়র সচিবসহ উর্দ্বতন কর্মকর্তাগণ অনুষ্ঠানটিতে অংশগ্রহণ করেন।

এছাড়া বিকেলে জলবায়ু বিষয়ক প্যারিস চুক্তি ও এজেন্ডা ২০৩০ বাস্তবায়ন বিষয়ে বৈশ্বিক জলবায়ু তহবিল (জিসিএফ) আয়োজিত উচ্চ পর্যায়ের একটি ইভেন্টে প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন পরিকল্পনা মন্ত্রী মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান এমপি। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি মোকাবিলা করার জন্য গঠিত গ্রীণ ক্লাইমেট ফান্ড-কে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে আয়োজিত এই প্যানেল আলোচনায় প্রদত্ত বক্তব্যে পরিকল্পনা মন্ত্রী ধনী দেশগুলোকে এক্ষেত্রে আরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

***

Video link
https://drive.google.com/file/d/12acXIKhZBfPX5oKBRPUyfyIxhxvUiYt_/view?usp=drive_web
https://drive.google.com/file/d/1szkAaaRjuj7AKrBt3VHPWRcxx4GLSInP/view?usp=drive_web
https://drive.google.com/file/d/1TuYqK-Iik_SRpyJiE-TYfk0parU5CZMM/view?usp=drive_web
https://drive.google.com/file/d/1lLWXi6VroPxYs09_Q3SrkB894XQMFCqN/view?usp=drive_web
https://drive.google.com/file/d/1aweit394AixPaDpPKS8nwEPhzmXPF_nj/view?usp=drive_web
https://drive.google.com/file/d/1DLpEO_xtYxV-HG_kKYeOCr28C-FBUazj/view?usp=drive_web
https://drive.google.com/file/d/1Tw7MMzHfFIkRn0NXASRKL3XE2UojM7t2/view?usp=drive_web
https://drive.google.com/file/d/1mBlxS7hEKbd6rK-0_RC8i8KgHvJT3KfG/view?usp=drive_web
https://drive.google.com/file/d/1cUXbc80V3XYjBVfFhBu_5crbsEE4asdp/view?usp=drive_web
https://drive.google.com/file/d/1DdKRXpL9hYk3cEiKvbse9FH1PjnGDnjs/view?usp=drive_web