মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মান্যবর রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধির শুভেচ্ছা বাণী

আজ ১৬ ডিসেম্বর। মহান বিজয় দিবস। বাঙালী জাতির ইতিহাসে এক অনন্য গৌরব উজ্জ্বল দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর পাকিস্তানী বাহিনীর আত্মসমর্পনের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় মহান মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়, বিশ্বমানচিত্রে জন্ম নেয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। এই উপলক্ষে প্রবাসী বাংলাদেশী ভাই-বোনদের সবাইকে জানাচ্ছি বিজয়ের শুভেচ্ছা।

আজকের এই দিনে আমি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি স্বাধীনতার মহান স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-কে, যাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে পরিচালিত হয় আমাদের দীর্ঘ মুক্তিসংগ্রাম। আমি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করছি বঙ্গমাতাসহ ১৫ আগস্টের শাহাদৎবরণকারী জাতির পিতার পরিবারের সকল সদস্য, জাতীয় চার নেতা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের ত্রিশ লাখ শহীদ ও দুইলাখ সম্ভ্রমহারা মা-বোনসহ সকল মুক্তিযোদ্ধাদের। একই সঙ্গে আমি কৃতজ্ঞতা জানাই বিশ্ব সভার সকল বন্ধু-রাষ্ট্র এবং জনগণকে যাঁরা সেই দুঃসময়ে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল।

কোভিড-১৯ মহামারির কারণে স্থানীয় নীতি ও নির্দেশনা অনুযায়ী এই বছর বড়ো পরিসরে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান আয়োজন করা সম্ভব হয়নি । আশা করছি করোনা মহামারির এই সঙ্কটময় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আগামী বছর জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে উৎসবমূখর পরিবেশে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর বাকী অনুষ্ঠানাদি উদযাপন করতে পারব। করোনা মহামারিতে প্রবাসী বাংলাদেশী ভাই-বোনদের মধ্যে অনেকেই মৃত্যুবরণ করেছেন। আমি তাঁদের সকলের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি এবং যারা করোনা আক্রান্ত হয়ে এখন অসুস্থ আছেন তাদের সুস্থতা কামনা করছি।

বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি, জনগণের জীবন মান বৃদ্ধি, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইস্যুতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় ও বিচক্ষণ নেতৃত্বের কারণে জাতিসংঘে আমাদের অবস্থান আজ অত্যন্ত সম্মানের আসনে। বিশ্বদরবারে বাংলাদেশ একটি দায়িত্বশীল ও প্রগতিশীল রাষ্ট্র এবং উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিত।বিশেষ করে রোহিঙ্গা ইস্যুতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মানবিকতা ও পদক্ষেপ সারাবিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনা অনুযায়ী জাতিসংঘে বাংলাদেশের অবস্থানকে কীভাবে আরও সমুন্নত রাখা যায় এ বিষয়ে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।

প্রবাসী বাংলাদেশীগণ বাংলাদেশের এই উন্নয়ন অগ্রযাত্রার অন্যতম অংশীদার। প্রবাসে বসবাসরত বাংলাদেশীগণ বিভিন্ন ইতিবাচক কর্মকান্ডের মাধ্যমে বিদেশে বাংলাদেশের সুনাম বৃদ্ধি করছে। আমি প্রত্যাশা করি, প্রবাসে বসবাসরত বাংলাদেশীগণ তাদের অর্জিতজ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা দিয়ে দেশের উন্নয়নে আরও ভূমিকা রাখবেন।জাতির পিতা তাঁর দীর্ঘ সংগ্রামের মাধ্যমে আমাদের দিয়ে গেছেন রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক মুক্তি। তাঁরই সুযোগ্য কন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে সামগ্রিক অর্থনৈতিকমুক্তি ও সমৃদ্ধির পথে। আসুন আমরা সবাই মিলে সুখী, সমৃদ্ধও উন্নত বাংলাদেশ গঠনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর ‘সোনার বাংলা’র স্বপ্নকে এগিয়ে নিয়ে যাই। মহান বিজয় দিবসে এটাই হোক আমাদের দৃঢ় অঙ্গীকার।

সকলকে ধন্যবাদ।

বাংলাদেশ চিরজীবি হোক।

 

স্বাক্ষরিত/-

( রাবাব ফাতিমা )